
স্টাফ রিপোর্টারঃ ভারতীয় সীমানত্মরড়্গী বাহিনী বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) এর সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ার মহাপরিদর্শক শ্রী সন্দীপ শালুনকি বলেন, সীমানত্ম অতিক্রম করে কোন জেএমবি জঙ্গি বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করছে এমন কোন সুনির্দিষ্ট তথ্য তাদের কাছে নেই। তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশের এই বিশাল সীমানত্ম পথে বিএসএফ ও বিজিবি পূর্ন নজরদারি রেখেছে। বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসীরাই সীমানেত্মর মূল অপরাধী একথা উলেস্নখ করে তিনি আরও বলেন, তাদেরকে খুজে বের করে বাংলাদেশ ভারত সীমানত্মকে নিরাপদ রাখতে বিজিবি ও বিএসএফ কাজ করে যাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, আমরা সীমানত্ম সন্ত্রাস দমনে সতর্ক রয়েছি।
দুই দেশের দুই বন্ধুপ্রতীম সীমানত্মরড়্গী স্থলভাগ ছাড়াও জল সীমানায় ভাসমান বিওপি স্থাপন করে পূর্ন নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে। ভারতীয় বিএসএফ এর দড়্গিন পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান রোববার সুন্দরবনের রায়মঙ্গলে তিন নদীর মোহনায় বিএসএফ ও বিজিবির যৌথ অনুশীলনকালে ভাসমান স্থাপনায় দুই বাহিনীর প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন। এসময় বাংলাদেশের পড়্গে বিজিবির দড়্গিন পশ্চিম রিজিওন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফরিদ হাসান উপস্থিত ছিলেন। তিনি নিজেও বিজিবির পড়্গে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেন। বিএসএফ প্রধান আরও বলেন, ভারতীয় এলাকায় ফেন্সিডিলের অবাধ ব্যবহার থাকলেও সাম্প্রতিককালে তা উৎপাদন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশে ফেন্সিডিল পাচারের প্রবনতাও হ্রাস পেয়েছে। এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সীমানত্ম এলাকাজুড়ে অবৈধভাবে যে সমসত্ম ফেন্সিডিল কারখানা গড়ে উঠেছিল তা গুড়িয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এ ব্যাপারে বিএসএফ কড়া নজরদারি অব্যহত রেখেছে। দড়্গিনের সুন্দরবন একটি বৃহৎ বানিজ্য রম্নট উলেস্নখ করে তিনি বলেন, নদী সীমানত্ম পথে সব ধরনের চোরাচালান দমনে বিজিবি ও বিএসএফ যৌথ টহলের ব্যবস্থা করেছে। এর মাধ্যমে মাদক, অস্ত্র এবং জালনোট সহ অন্যান্য সব ধরনের চোরাচালান শূন্যের কোঠায় নেমে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ ও ভারতীয় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বিজিবির রিজিওন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার ফরিদ হাসান বলেন, ভারত থেকে বাংলাদেশে গবাদি পশুর চোরাচালান শতকরা ৭০ ভাগ হ্রাস পেয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে গরম্ন আনার জন্য ভারতে যাওয়া নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। এতে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ গবাদি পশু পালনে আরও বেশী মনোযোগী হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার এদের সহায়তা দিচ্ছে উলেস্নখ করে তিনি বলেন, গবাদি পশুর মাংস এখন বাজারে অপেড়্গকৃত সহজলভ্য দরে বেচাকেনা হচ্ছে। যৌথ অনুশীলন পরবর্তী বিজিবি ও বিএসএফ এর প্রেস ব্রিফিংয়ে দুই বাহিনীর দুই কর্মকর্তা বলেন, সুন্দরবন অঞ্চলে জলদস্যূদের উৎপাত দমনে তারা প্রতিশ্রম্নতিবদ্ধ। শুধু জলদস্যুই নয়, সব ধরনের সীমানত্ম অপরাধী দমনে আমরা একযোগে কাজ করে যাচ্ছি। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশ ঘটছে এক ভারতীয় সাংবাদিকের এমন অভিযোগের জবাবে বিএসএফ এর সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ার প্রধান তা নাকচ করে দিয়ে বলেন, এ ধরনের অভিযোগ সঠিক নয়। এমন কোন তথ্য তার কাছে নেই উলেস্নখ করে তিনি আরও বলেন, অবৈধ অনুপ্রবেশ, নারী ও শিশু পাচার বন্ধে বিজিবি ও বিএসএফ একযোগে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। দুই বাহিনীর যৌথ মহড়া ভারত ও বাংলাদেশের বন্ধুত্বের অন্যতম দৃষ্টানত্ম মনত্মব্য করে বিএসএফ এর সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ার প্রধান সন্দীপ শালুনকি আরও বলেন, এই ধরনের অভিযানের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারতের জনবহুল সীমানত্ম জীবন নিরাপদ রাখতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সন্ত্রাসই সীমানেত্মর জন্য প্রধান হুমকি এই মনত্মব্য করে যৌথ প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, এসব অপরাধ দমনে দুই বাহিনী সবসময় প্রস্তুত রয়েছে। সুন্দরবন এলাকায় তিনদিন ব্যাপী যৌথ অনুশীলনের তৃতীয় দিন রোববার রায়মঙ্গল, ইছামতি ও কালিন্দী নদীর টি জংশন এলাকায় ভাসমান বিএসএফ বিওপি কামাড়্গ্যায় এই প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। এর আগে বিজিবি ও বিএসএফ সদস্যরা জাহাজে আনত্মর্জাতিক সন্ত্রাসী তলস্নাশির মহড়া প্রদর্শন করেন। এসব কর্মসূচীতে বিজিবির পড়্গে আরও উপস্থিত ছিলেন, খুলনার সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোঃ ইকবাল, বিজিবির ৩৪ ও ৩৮ ব্যাটেলিয়ন কমান্ডার যথাক্রমে লে. কর্নেল মাকসুদ আহমেদ ও লে. কর্নেল আরমান হোসেন, আরবিজি অধিনায়ক লে. কমান্ডার রেদোয়ান সহ বিজিবির কর্মকর্তারা। অপরদিকে বিএসএফ এর পড়্গে আরও উপস্থিত ছিলেন, ৩ ব্যাটেলিয়ন কমান্ড্যান্ট অজয় কুমার ও ১১৬ বিএসএফ কমান্ড্যান্ট অজিত কুমার পি।
বিজিবি ও বিএসএফ এর মহাপরিচালক পর্যায়ের সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধানত্ম মোতাবেক সীমানেত্ম এই যৌথ মহড়ার এটাই ছিল প্রথম। এর মাধ্যমে দুই দেশের দুই বাহিনীর মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্ক আরও সংহত হবে বলে মনত্মব্য করেন তারা। বিজিবি ও বিএসএফ সীমানত্মকে সুরড়্গিত রাখতে নানামুখী পরিকল্পনা গ্রহন করেছে মনত্মব্য করে ব্রিফিংয়ে আরও বলা হয়, যৌথ অনুশীলনের মাধ্যমে সীমানেত্মর অপরাধীদের চিহ্ণিত করে তাদের দমনের সব উদ্যোগ গ্রহন করেছে। যথাযথ সীমানত্ম ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এই অনুশীলন অব্যাহত থাকবে বলে প্রেস ব্রিফিংয়ে উলেস্নখ করা হয়। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএসএফ কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশের জেলেরা ভারতীয় এলাকায় ঢুকে পড়লে সিদ্ধানত্ম অনুযায়ী তাদেরকে বিজিবির হাতে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু কোস্টগার্ড অথবা ভারতীয় পুলিশের হাতে ধরা পড়লে বিএসএফ এর কিছুই করার থাকে না। ভুল করে তারা নদী সীমানেত্ম ঢুকে পড়লেও তাদের প্রতি আইনী ও মানবিক আচরন করা হয়ে থাকে। ভারতীয় সীমানেত্ম কাঁটাতারের বেড়া, টহলদারি, তলস্নাশি এবং সন্ধ্যায় ফ্লাড লাইটের মাধ্যমে অপরাধীদের চিহ্ণিত করার কাজ করা হয়ে থাকে বলে উলেস্নখ করেন তিনি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন