রবিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৫

শ্যামনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঝাড়ুদার দিয়ে কলেজ ছাত্রের আঙ্গুল অপারেশ

শেখ আবু আজিম: শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিন ধরে ঝাড়–দার দিয়ে চলছে ছোটখাটো শৈল্য চিকিৎসা। কর্তব্যরত চিকিৎসকের নির্দেশে ঝাড়ুদার দিয়ে কলেজ ছাত্রের হাতের আঙ্গুলে জন্মানো আচুলি অপরারেশন করায় চিরদিনের জন্য আঙ্গুল হারাতে বসেছে হতদরিদ্র পরিবারের কলেজ ছাত্র শাহিনুর আলম। ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্র জানায়, আঙ্গুলের আচুলিয় অপারেশনের জন্য গত ২৬ ফেব্র“য়ারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ডাঃ গোপাল বিশ্বাসের স্মরনাপন্ন হয়। ডাঃ গোপাল চন্দ্র তাকে কিছুক্ষন বসিয়ে রেখে জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত ঝাড়ুদার আশরাফ আলীকে আচুলি অপরারেশ করার জন্য নির্দেশ দেয়। এ সময় শাহিনুর আলম আশরাফ আলীর দ্বারা অপারেশনে আপত্তি জানালে ডাঃ গোপাল বিশ্বাস বলেন, “এধরনের ছোটো খাটো অপারেশন আশরাফ আলীই যথেষ্ঠ”। ঐদিন সকাল সাড়ে ১১ টায় ঝাড়ুদার আশরাফ আলী শাহিনূরের আঙ্গুলের অপারেশন করে যেনো তেনো ভাবে ব্যান্ডেস করে বিদায় দেয়। সপ্তাহ খানেক পরে ঐ আঙ্গুলে ইনফেকশান দেখায়ে যা পচনে পরিনত হয়। এ সময় শাহিনুর আলম ডাঃ গোপাল বিশ্বাসের কাছে গেলে তিনি আঙ্গুলের দূর অবস্থা দেখে অঙ্গুল কেটে ফেলার পরামর্শ দেয়। শাহিনুর আলম আরো জানায়, অপারেশনের পর ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী দৈনিক ৪টি করে এন্টিবায়োটিক সেবন করে। শাহিনুরের অভিযোগে আরো জানা যায় অপারেশনের সময় ডাঃ গোপাল বিশ্বাস জরুরী বিভাগের পাশে অবস্থিত ওয়েটিং রুমে টিভিতে বাংলাদেশ ভারত ক্রিকেট খেলা দেখায় মত্ত ছিলেন। আঙ্গুলের অবস্থার অবনতিতে শাহিনুর আলম একই হাসপাতালের অপর শৈল্য চিকিৎসক ডাঃ সুজিত বাবুর স্মরনাপন্ন হলে তিনি প্লাস্টিক সার্জারীর পারামর্শ দেন এবং বলেন যে, জুরুরী ভাবে প্লাস্টিক সার্জারী না করলে আঙ্গুলটি চিরদিনের জন্য হারাতে হবে। এমতাবস্থায় ডাঃ সুজিত বাবু শাহিনুর আলমের আঙ্গুলে প্লাস্টিক সার্জারীরর মাধ্যমে শরীরের অন্যস্থান থেকে চামড়া নিয়ে ঐ আঙ্গুলে স্থাপন করে আঙ্গুলের আকৃতিটা বজায় রাখে কিন্তু আঙ্গুলটি সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে পড়েছে। সর্বশেষ শাহিনুর আলম অল্প কিছু পয়সা জোগাড় করে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ভারতের তামিল নাড়ুতে অবস্থিত সি, এম, সি, হাসপাতালে যায়। সেখানে চিকিৎসকরা পরিক্ষা নিরিক্ষা করে জানায় যে, লক্ষাধিক টাকা খরচ হবে। শাহিনুর আলম যথারিতী দেশে ফিরে আসে এবং শ্যামনগর হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ গোপাল বিশ্বাসকে ঘটনাটি জানায় ডাক্তার এটা একটি দূরঘটনা বলে মন্তব্য করেন। এখন শাহিনুর আলম দিশে হারা হয়ে পড়েছে কোথায় পাবে এত পয়সা। এব্যাপারে শাহিনুর আলমের পিতা অজিয়ার রহমান জানান, আমার পুত্র শাহিনুর আলম পড়ালেখার ফাকে ফাকে কম্পিউটারের কাজ করতো তা থেকে নিজের লেখাপড়া খরচ জুগিয়ে পরিবারে কিছু সহযোগীতা করত। আঙ্গুল নষ্ট হওয়ার কারনে এখন সে আর কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারছেনা। তাছাড়া চিকিৎসার জন্য ১ লক্ষ টাকা জোগাড় করাও সম্ভব না। এখন তার প্রশ্ন হলো, “আমার ছেলে আঙ্গুল ফিরিয়ে দেবে কে? সরকারী হাসপাতালে শৈল্য চিকিৎসার দায়িত্বকি ঝাড়–দারদের?

২টি মন্তব্য:

  1. হিন্দুদেরকে আমি আগে সম্মান করতাম একারনে যে তাা তাদের কর্তব্যে ফাকি দিতো না। কিন্তু ইদানিং এরা অন্যায়ের দিক থেকে মুসলিমদের ও ছাড়িয়ে যাচ্ছে। সত্যিই দুঃখিত আমার বাড়ি শ্যামনগর । আমার পরিবারের চিকিৎসা তো ওখানেই করাই। সত্যিই আমি আতংকিত এই ঘটনা তো আমার পরিবারের উপর ও হতে পারতো। এটা ভেবে আসুন আমরা সবাই রুখে দাড়াই এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে।

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. হিন্দুদেরকে আমি আগে সম্মান করতাম একারনে যে তারা তাদের কর্তব্যে ফাঁকি দিতো না। কিন্তু ইদানিং এরা অন্যায়ের দিক থেকে মুসলিমদের ও ছাড়িয়ে যাচ্ছে। সত্যিই দুঃখিত আমার বাড়ি শ্যামনগর । আমার পরিবারের চিকিৎসা তো ওখানেই করাই। সত্যিই আমি আতংকিত এই ঘটনা তো আমার পরিবারের উপর ও হতে পারতো। এটা ভেবে আসুন আমরা সবাই রুখে দাড়াই এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে।

      মুছুন