শনিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৫
একান্ত সাক্ষাতকারে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সায়েদ মোঃ মনজুর আলম
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সায়েদ মোঃ মনজুর আলম। সততা ও দক্ষতার কারণে অল্প সময়ের মধ্যে তিনি সব মহলে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। তার কাজে রয়েছে সৃজনশীলতার ছোয়া। এজন্য সৃজনশীল নির্বাহী কমকর্তারা খ্যাতি পেয়েছেন। সম্প্রতি তিন সুন্দরবন বার্তার মুখোমুখি হয়েছিলেন। একান্ত সেই আলাপচারিতায় তিনি তার নিজের সম্পর্কে, এলাকার উন্নয়নে তার পরিকল্পনা ও নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। সুন্দরবন বার্তার পাঠকদের জন্য সেই আলাপচারিতার চৌম্বক অংশ প্রকাশ করা হলো।
সাক্ষাতকারটি গ্রহণ করেছেন আমাদের স্টাফ রিপোর্টার : মাসউদ-উন-নবী সাহেদ।
সুন্দরবন বার্তা : প্রশাসনিক কমকর্তা হিসাবে আপনি বেশ জনপ্রিয়, যেটা সাধারণত ব্যতিক্রমী ঘটনা, এটা কিভাবে সম্ভব হলো?
ইউএনও : আসলে প্রশাসনিক কমকর্তা হিসাবে জনপ্রিয় এটা আমি প্রথম শুনলাম। এটা আমার জন্য Pleasure। আসলে জনপ্রতিনিধিরাই জনপ্রিয় হয়। প্রশাসনিক কমকর্তারা জনপ্রিয় হয় এটা Rear ঘটনা। এটা যদি সত্যি হয় তবে আমার দায়বদ্ধতা আরো বেড়ে গেল। এটা ভবিষ্যতে কাজ করায় আমাকে সহায়তা করবে। আমি যেটা করি সেটা হলো, এটা জনগনের অফিস এখানে যদি জনগনের কথা মূল্যায়ন করা হয় তবে কাজটি অনেক সহজ হয়ে যায়।
সুন্দরবন বার্তা : এই জনপ্রিয়তার মূল কারন কি? আপনার ব্যাক্তিত্ব,কাজ,নাকি সততা?
ইউএনও : খুব ভাল একটি প্রশ্ন করেছেন। এটি সবমিলেই, ব্যক্তিত্ব, কাজ, সততা। ঘাটতি থাকলে এর পূর্ণতা আসবে না। ব্যক্তিত্ব যেমন সবাইকে সমান চোখে দেখা, আইন কে সঠিক ভাবে বাস্তবায়ন করা। যখন যে কাজ তা সঠিক ভাবে গুরুত্ব অনুসারে করা। কাজটাকে পরিপূর্ণতা নিয়ে করা। আর সততা তো থাকতেই হবে। সুশাসন এর জন্য সততা অবশ্যই প্রয়োজন।
সুন্দরবন বার্তা : ব্যক্তি জীবনে আপনি কেমন?
ইউএনও : ব্যক্তি জীবনে কেমন এটি কঠিন একটি প্রশ্ন। আসলে যারা আমার সাথে মেশে তাঁরাই ভাল বলতে পারবেন। ব্যক্তি জীবনে টক, ঝাল, মিষ্টি, মন্দ, ভাল মিলেই আমি মানুষ বলে মনে করি।
সুন্দরবন বার্তা : আপনি কি কাওকে ফলো করেন?
ইউএনও : আমি আমাদের অনেক সিনিয়ার অফিসার দের ফলো করি। আমি প্রথম যখন চাকরিতে জয়েন্ট করি তখন প্রথম ডিসি ছিলেন গাজী মো: জুলহাজ আমি ওনাকে ফলো করি। যশোরে যখন ছিলাম তখন যশোরের জেলা প্রশাসক ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান তাকেও আমি ফলো করার চেষ্টা করি। আমার একটি বড়ো ভাগ্য হলো আমি যত ডিসি স্যার দের আন্ডারে কাজ করেছি সবাই খুব ভাল। বর্তমান ডিসি নাজমুল আহসান স্যার তিনি একজন Extraordinary প্রশাসক Innovative একজন প্রশাসক Creative প্রশাসক, তার আন্ডারে কাজ করে তাকেও ফলো করার চেষ্টা করি।
সুন্দরবন বার্তা : আপনার পূর্বের কর্মস্থল যশোরের কেশবপুর, সেখানেও কি এমন জনপ্রিয় ছিলেন?
ইউএনও : এটা বলা মুশকিল। এটা কেশবপুর এর জনগণ বলতে পারবে, আমি বলতে পারবো না।
সুন্দরবন বার্তা : দেশের উন্নয়নে প্রশাসনিক কমকর্তাদের সততা কতটা গুরুত্বপূর্ণ বলে আপনি মনে করেন?
ইউএনও : দেশের উন্নয়নে শুধু প্রশাসনিক কর্মরতা না, এটি সবার জন্য সব প্রতিষ্ঠানের জন্য। সুশাসন নিশ্চিত করতে হলে সততা একটি Integrator আমাদের অনেক গুলো Integrator তার মধ্যে সততা একটি Integrator এটা সবার মধ্যে থাকতেই হবে।
সুন্দরবন বার্তা : আপনার উদ্যোগ ও কাজে সৃজনশীলতার ছোয়া পাওয়া যায়, সে জন্য আপনি সৃজনশীল নির্বাহী কমকর্তার খ্যাতি পেয়েছেন। এই সৃজনশীলতা আপনার মধ্যে কিভাবে এসেছে?
ইউএনও : আসলে সৃজনশীল বলতে ইংরেজিত Creativity বলে। এই Creativity সবার মধ্যেই আছে। একটি বাচ্চার মধ্যেও Creativity থাকতে পারে। Creativity হচ্ছে একটি Mental process যখন এটি। বাস্তবে রুপ দেওয়া হয় Productive process যখন আসবে তখন এটি Innovation হয়। উদ্ভাবন হয়, আমরা কিছু উদ্ভাবনি কাজ করছি। এর জন্য আমাদের উপজেলা পরিষদ উপজেলার বিভিন্ন স্তরের কমকর্তা, আমাদের জাতীয় সংসদ সদস্য, আমাদের বিভাগীয় কমিশনার, আমাদের জেলা প্রশাসক আমরা এক যোগে কাজ করছি। এখন যুগই হচ্ছে Innovation এর যুগ। আমরা যেটা বিশ্বাস করি Innovation for all Innovation by all এর মূল মন্ত্রে আমরা কাজ করছি। এই কাজ করছি বলেই উদ্ভাবনি কাজ গুলো এখন দৃশ্যমান হচ্ছে এবং সেটি সবাই গ্রহন করছে। এই জন্য মনে হয় এই ধরনের প্রশ্ন আসছে।
সুন্দরবন বার্তা : শ্যামনগরের উন্নয়নে আপনার নেয়া উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গুলো কি কি?
ইউএনও : আমি এখানে জয়েন্ট করার পর যেটা দেখেছি এখানে যে সম্পদ গুলো আছে সে গুলো যদি সঠিক ব্যবহার করতে পারি তবে এই অঞ্চলের অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। অন্য কারো কাছে হাত পাতাতে হবে না। আমাদের এখানে সম্পদের মধ্যে আপনারা জানেন আমাদের ''ম্যান গ্রোভ ফরেষ্ট'' সুন্দরবন। এটি বিশ্বখ্যাত, অনেক দেশ ইচ্ছে করলেও কিন্তু তাদের হবে না। এটা আমাদের এবং এর ৬০% হচ্ছে আমাদের বাংলাদেশের। আবার বাংলাদেশের ৬০% হচ্ছে শ্যামনগরের সবচেয়ে কাছে। এটা কিন্তু আমরা জানাতে পারিনি বিশ্বের কাছে। এটাকেও যদি আমরা ব্যবহার করতে পারি পর্যটনের মাধ্যমেই হোক বা এ অঞ্চলের উন্নয়নের মাধ্যম দিয়েই হোক। তবে আমাদের অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। তার মধ্যে বেকার সমস্যা সমাধান, এই অঞ্চলের পশ্চাৎপদতা। যদি আমরা সুন্দরবনকে নিয়ে পরিকল্পনা গ্রহন করি তবেই আমরা এগোতে পারবো। সুন্দরবন কে কেন্দ্র করে আমরা কিছু পরিকল্পনা গ্রহন করেছি সাথে সাথে আমরা এই অঞ্চলের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং আমাদের যে জনশক্তি আছে সেটাকেও আমরা ব্যবহার করার চেষ্টা করছি। সাথে সাথে আমদের যে কৃষ্টি কালচার, আমাদের যে ঐতিহ্য, আমাদের ইতিহাস এটি ও সংরক্ষনের কাজ করছি। যারই ফলশ্রুতিতে আমরা এখানে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার করতে পেরেছি। মহান মুক্তিযুদ্ধের কিছু বধ্যভূমিতে ও কিছু নিদর্শন করার চেষ্টা করছি। যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এই ইতিহাস ধারণ করে সামনে এগিয়ে যেতে পারে।
সুন্দরবন বার্তা : ভবিষ্যতে আরো কি কি পরিকল্পনা আছে ?
ইউএনও : ভবিষ্যতে আমরা যেটা করতে যাচ্ছি সেটা হলো এই অঞ্চলের একটি Geo reference আমরা তৈরি করতে যাচ্ছি। আমরা একটি মোবাইল Apps এর মাধ্যমে এই অঞ্চলের Geo reference করতে চাচ্ছি। এই অঞ্চলে যে প্রান্তিক জনগোষ্ঠি আছে তাদের জন্য আমরা স্বল্প মূল্যে কিভাবে বা একেবারে সরকারি অনুদানের এর বাইরে গিয়ে বিদ্যমান অনুদানের মধ্যে দিয়ে কিভাবে তাদের ঘর বাড়ি বানিয়ে দেওয়া যায়। সরকারী যে সম্পদ গুলো আছে সে গুলো কি ভাবে সুষ্ঠ ব্যবহার করা যায়। আমরা এক জায়গায় যদি সবগুলো করি যেমন আমরা সোলার পল্লী করেছি সব সোলার এক অঞ্চলে নিয়ে গেছি। এ অঞ্চলে বিদ্যুৎ একটি সমস্যা। বিদ্যুৎ কে গ্রহণযোগ্য করার জন্য কৈখালীতে সোলার প্যানেল করার একটি সিদ্ধান্ত আমরা সরকার কে জানিয়েছি। আমরা আশাকরি যে এ অঞ্চলে যে বিদ্যুৎ প্রয়োহন তার চাহিদা মিটিয়েও সোলার বিদ্যুৎ জাতিয় গ্রিডে যাবে এটা নতুন একটি Concept আমরা রীতিমত কৈখালীতে যাদুকপুর মৌজাতে প্রায় ৬০ একর জায়গা পড়ে আছে ওখানে কাজ করার জন্য সরকার কে প্রস্তাব দিচ্ছি। এ অঞ্চলের অধিকাংশ কর্মকান্ড সুন্দরবন কেন্দ্রিক। আমরা তাদের সুন্দরবন এর বাইরে নিয়ে এসে কাজ করানোর চেষ্টা করছি। আমরা কাকড়া চাষ করতে চাচ্ছি, কৃষির কিছু নতুন উদ্ভাবনী তাদের কাছে পেশ করতে চাচ্ছি। কিছু দিনের মধ্যেই শ্যামনগর উপজেলা কৃষি বিভাগ ও কিছু এনজিও এর সহায়তায় একটি কৃষি Technology park হতে যাচ্ছে। আমরা মাছ চাষিদের একটি প্রকল্প সরকারকে জানিয়েছি এ অঞ্চলে কাকড়ার রেনু পোনা করা যায় কি না। ওটা যদি আসে। তাহলে এ অঞ্চলের ব্যাপক পরিবর্তন হবে। এই কাকড়া আমরা রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারি।
পর্যটনের কিছু কাজ আমরা করছি। ভবিষ্যতেও কিছু কাজ আমরা নিচ্ছি। আমরা দেখছি এ অঞ্চলের জনশক্তি সাধারণত মধ্যপ্রাচ্যে বেশি যায়। সে কারনে তাদেরকে মধ্যপ্রাচ্যের অনুযায়ী তৈরি করার জন্য উপজেলা পরিষদের সাথে আরবী প্রশিক্ষন কেন্দ্র খুলতে যাচ্ছি। মধ্যপ্রাচ্যের কৃষ্টি কালচার প্রশীক্ষণ দেওয়া হবে। এক মাসের কোর্স করানো হবে। আগামি ডিসেম্বর নাগাদ আমরা এ ট্রনিং সেন্টার এর উদ্বোধন করবো।
সুন্দরবন বার্তা : এ অঞ্চলে কাজ করতে আপনি কি কি ধরনের চ্যালেজ্ঞের সম্মুখীন হতে হয়েছেন?
ইউএনও : আসলে চ্যালেঞ্জ বলতে সেটা বোঝায় যেটা অতিক্রম করা যায় এবং অতিক্রম করতে তেমন কষ্ট পেতে হয় না। সে গুলোকেই চ্যালেজ্ঞ বলা হয়। এখানে চ্যালেজ্ঞ বলতে, এই অঞ্চলের লোকজন কে Motivat করতে একটু চ্যালেজ্ঞ মনে হয়েছে যদি তাদের কে বোঝান যায় তবে তারা কাজ করতে পারে। আর তেমন চ্যালেজ্ঞ মনে হয় নি।
সুন্দরবন বার্তা : আপনার দৃষ্টিতে শ্যামনগরের সম্ভবনাময় দিক গুলো কি?
ইউএনও : সম্ভবনার দিক হচ্ছে এই অঞ্চলের মানুষ পরিশ্রমী। প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করার শক্তি তাদের আছে। এই শক্তি তাদের একটি গুন। আর একটি হচ্ছে Natural Beauty সুন্দরবন। এটি আমাদের একটি সম্পদ। মৎস একটি সম্পদ, এ অঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশ একটি সম্পদ। এখানে ১২ হাজার একর খাস জমি আছে। এটাকেও যদি আমরা সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে পারি তো এটিও সম্পদ এবং প্রচুর পরিমান খাল বিল আছে সেটিও সম্পদ। আমাদের কৃষ্টি, কালচার, এ অঞ্চল রাজা প্রতাপাদিত্তের অঞ্চল। এগুলো যদি আমরা Explore করতে পারি এটাও সম্পদ ও সম্ভাবনার একটি বড় দিক।
সুন্দরবন বার্তা : আর সমস্যার দিক গুলো কি?
ইউএনও : সমস্যা প্রথমেই যেটা বলতে হয় যোগাযোগ ব্যবস্থা, দ্বিতীয়ত বিদ্যুৎ সমস্যা। এই সমস্যার কারনে এই অঞ্চলে শিল্পায়ন হচ্ছে না। এ অঞ্চলের নোওয়াবেকিকে বলা হয় শিল্প অঞ্চল। আমরা নোওয়াবেকিকে শিল্প শহর করার জন্য সরকার কে চিঠি দিয়েছি। আমরা আশা করছি এটা হয়ে যাবে। এছাড়াও সমস্যা আনেক কঠিন যে গুলো আমার পক্ষে সম্ভাব না, ছোট স্কেলে সম্ভাব না, উপজেলার অল্প অল্প সম্পদ দিয়ে যে গুলো মেটান সম্ভব না। তার মধ্যে লোনাপানি অবশ্যই এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ।
সুন্দরবন বার্তা : সীমান্ত অঞ্চল হওয়ায় এখানে চোরাচালন ও মাদকদ্রব্যের প্রভাব বেশি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আপনি কি কি পদক্ষেপ নিয়েছেন?
ইউএনও : চোরাচালান বলতে মাদকই আসে এখানে তা ছাড়া চোরাচালান বলতে কিছুই হয় না। অনেক অঞ্চলের চেয়ে আমাদের এই অঞ্চল অনেক Safe তবে মাদকের জন্য যেটা করছি Crash program চলছে। মোবাইল কোর্ট চলছে। আমাদের বিজিবি, কোচগার্ড ও পুলিশ তৎপর আছে। আমি আশা করি অন্য অঞ্চলের চেয়ে আমরা ভালো করছি এবং করবো।
সুন্দরবন বার্তা : সাম্প্রতিক উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতেও শ্যামনগর ছিল স্বাভাবিক, এটা কি ভাবে সম্ভব হয়েছে।
ইউএনও : আসলে এটি কোন বিভাগের একক কৃতিত্ব না। এটা সকলের প্রচেষ্টায়। আসলে এটি আমাদের জনগনের জন্য সম্ভব হয়েছে, তারা শান্ত ছিল। সবাই শান্তি চায় তার সবাই এক হয়েছে। আমাদের রাজনৈতিক ব্যক্তি বৃন্দ, আমাদের এম পি মহোদয়, আমাদের উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদ জনপ্রতিনিধিরা, আমাদের গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। সবাই শান্ত থাকার জন্য কাজ করেছেন। সে জন্য তার ফল আমরা বেশি পেয়েছি। আমরা চাই এটা বজায় থাকুক এবং এর মাধ্যমে পরিবেশ পরিস্থিতি উন্নয়নের সাথে সাথে আমাদের এলাকার উন্নয়ন ও আমরা চাই।
সুন্দরবন বার্তা : শ্যামনগর এর মানুষ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কি ?
ইউএনও : শ্যামনগর এর মানুষ খুব বন্ধু সুলভ এবং তারা খুব পরিশ্রমি। তারা প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করতে ভালবাসে। চ্যালেজ্ঞ কে সহজে গ্রহন করতে ভালবাসে। তারা সংকৃতিক প্রিয় খেলাধুলা প্রিয়। এদের যদি সঠিক নেতৃত্ব দেয়া যায় তবে শ্যামনগর এর জনগনকে আমরা জনসম্পদে পরিনত করতে পারবো।
সুন্দরবন বার্তা : শ্যামনগর এর মানুষ আপনাকে ভালোবাসে, আপনিও নিশ্চই বাসেন। ভলোবাসার এই বন্ধন আরো দৃঢ় হবে কিভাবে ?
ইউএনও : অমি শ্যামনগরে চাকুরি করি যখন তখন শ্যামনগর এর মানুষের প্রতিবেশি। তাই প্রতিবেশি প্রতিবেশিকে ভালোবাসবেই, আর ভালো না বাসলে তো আর এক সাথে চলা যাবে না। আমি চেষ্টা করি এবং সবাই আমাকে সহায়তা করে বলেই কাজকর্ম সহজ ভাবে করতে পারি। আগামীতে কাজ করার মাধ্যমে তাদের সাথে পরিচয়ের মাধ্যমে সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে এবং এটাই তো সম্পক দৃঢ় হওয়ার পন্থা।
সুন্দরবন বার্তা : শ্যামনগর এর একমাত্র অনলাইন নিউজ পোর্টাল সুন্দরবন বার্তা ডটকম। এ অঞ্চলের উন্নয়নে এটি কিভাবে ভূমিকা রাখতে পারে বলে আপনি মনে করেন।
ইউএনও : শুনে খুব ভলো লাগলো। সবাই শ্যামনগর কে চেনে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্ সুন্দরবনের জন্য, আর একটি হলো দুর্যোগ বিধস্ত জনপদ হিসেবে। তার মধ্যে মাঝে মাঝে সৃজনশীল কাজ হয় এবং একটি অনলাইন পত্রিকা হয়েছে যারা করেছেন তাদের আমি কৃতজ্ঞতা জানাই। সরকার যেটা মনে করে সেটা হলো জ্ঞানই জীবন। এই জ্ঞান যদি সঠিক সময় সঠিক তথ্যের মাধ্যমে মানুষ কে দেওয়া যায় তাহলে ওটা কিন্তু তার জন্য জ্ঞান। সেইজ্ঞান যদি সে ব্যবহার করতে পারে তবে তার জীবন উন্নত হবে। যেমন- আমাদের এখানে ঝড় হবে, এ তথ্যটা যদি সঠিক সময়ে মানুষ কে জানাতে পারা যায় এবং জানার পর ঝড়ের কবল থেকে তারা বাঁচতে পারল। বাঁচতে পারলেই তারা কিন্তু সম্পদে পরিনত হবেন। এজন্যOnlineএর মাধ্যমে Latest খবর গুলো যদি দ্রুত মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারে তাহলে এটা অনেক উপকারে আসবে। আমি মনে করি আপনাদের জন্য যেটা চ্যালেঞ্জ সেটা হলো মানুষের কাছে কত দ্রুত আপনারা পৌঁছাতে পারেন। আমি আশাকরি আপনারা খুব দ্রুত পৌঁছাতে পারবেন এবং আপনাদের উদ্দেশ্য সফল হবে।
সুন্দরবন বার্তা : এ উদ্যোগকে আপনি কিভাবে দেখছেন ?
ইউএনও : বেসরকারি পর্যায়ে এ ধরনের উদ্যোগ প্রসংশনীয়। আমরা উপজেলা পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন আপনাদের পাশে আছি। যদি আমাদের কোন প্রয়জন হয় টেকনিক্যাল বিষয়ক, আপনারা জানাবেন। আপনারা জানেন যে এখানে আগে 3G ছিল না। আমি আসার পর দুইটি কোম্পানির সাথে কথা বলে 3G ব্যবস্থা করেছি। আমরা উপজেলায় Wi-Fi এর ব্যবস্থা করছি। আপনারা যদি চান তো আপনাদের সংবাদিক দের কিছু টেকনিকাল ট্রেনিং এর ব্যবস্থা আমরা করতে পারি।
সুন্দরবন বার্তা : অনেক ব্যাস্ততার মধ্যেও আমাদেরকে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
ইউএনও : ধন্যবাদ আপনাদেরকেও। আমাকে এই সাক্ষাত্কার নিয়ে সম্মানিত করার জন্য। আমি আশা করি আপনাদের এই উদ্যোগ সফল হোক। আপনারা শ্যামনগর কে এই অনলাইন বার্তা sundarban barta এর মাধ্যমে সারা বিশ্বের কাছে পরিচিত করবেন। সাথে সাথে আমাদের উন্নয়ন মুলক কাজ। আমাদের গঠন মুলোক সমলাচনা আমরা প্রত্যাশা করছি।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন