শনিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৫

আসামি ধরার নামে মধ্যরাতে পুলিশের হানা, মারপিটে পা ভাঙ্গলাে গৃহবধূ আছিয়া খাতুনের


আকবর কবীর : মধ্যরাতে পুলিশি নির্যাতনে পায়ের হাড় ভেঙ্গে তীব্র যন্ত্রনায়  চিৎকার করছেন কাশিমাড়ি ইউনিয়নের গৃহবধূ আছিয়া খাতুন। কােন মামলা নেই , কােন অপরাধের প্রমানও  নেই তা সত্ত্বেও শ্যামনগর থানা পুলিশের এক  কর্মকর্তা দুইজন  কনস্টেবল ও বেশ কয়েকজন লােককে সাথে নিয়ে শুক্রবার গভীর রাতে হানা দেয় আছিয়াদের বাড়ি।
তবে পুলিশ রাতে তার বাড়িতে হানা দেওয়ার অভিযােগ স্বীকার করে জানিয়ছে ‘ আছিয়ার স্বামী আবদুল খালেক একটি নাশকতার মামলার আসামি। সে পালিয়ে যাওয়ায় আমরা তার ঘরেও উঠিনি , মারপিট করার প্রশ্নই ওঠেনা’ ।
আছিয়া অভিযােগ করে বলেন ‘ গভীর রাতে আমার  স্বামী আবদুল খালক  ও ছেলে আসাদুল ইসলাম পুলিশর উপস্থিতি টের পেয়ে  আতংকিত হয়ে দ্রুত ঘর থেকে বেরিয়ে ছুটাছুটি করত থাকে’। এ সময় পুলিশ ঘরে ঢুকে আমাকে একা পেয়ে বেপরােয়াভাবে মারপিট করে। আমি চিৎকার দিয়ে কান্নাকাটি করলেও তারা শােনেনি’।  পুলিশের নির্দয় মারপিটে আছিয়া বগমের ডান পায়র উরু সন্ধির হাড় ভেঙ্গে যায়। তাকে ফেলে রেখে  পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে প্রতিবশিরা এসে তাকে উদ্ধার করে রাতেই শ্যামনগর হাসপাতালে পাঠায়। শ্যামনগর হাসপাতাল থেকে আছিয়াকে শনিবার দুপুরে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে পাঠানাে হয়েছে। ডাক্তার জানিয়েছেন তার পায়ে অস্ত্রপচার জরুরি হয়ে পড়েছে।
হাসপাতাল থেকে আছিয়ার স্বামী আবদুল খালক বলেন‘আমি কােন মামলার আসামি নই । আমার বিরুদ্ধে গােপালগঞ্জের ইটভাটার শ্রমিক হিসাবে আমাকে একটি মামলায় আসামি করা হলও আমি  জামিনে রয়েছি ’। তিনি বলেন সরকারের সাড়ে চার বিঘা খাস জমিতে চল্লিশ বছর যাবত ধান ও মাছ চাষ করে আসছি। সম্প্রতি এই জমি দখল করে নেয় এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি মিজানুর রহমানের আত্মীয় গােবিন্দপুর গ্রামের আজিজুল ও আরিফুল। আমি এর বিরদ্ধ আদালতের আশ্রয় নিলে আদালতের আদশে তাদেরকে উচ্ছেদ করা হয় । তা সত্ত্বেও তারা ফের দখল করলে আমি কালিগঞ্জ সার্কেল এএসপির শরনাপন্ন হই ।  তিনি শ্যামনগর থানা পুলিশকে নির্দেশ দন প্রতিপক্ষকে সরিয়ে দিতে।
খালেক আরো বলেন পুলিশ মিজানুর রহমান কর্তৃক প্রভাবিত হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে ২৫/৩০ জন লােক নিয়ে আমার বাড়িতে ঢুকে এই নির্যাতন চালায়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ছুটিতে থাকা শ্যামনগর থানার ওসির দায়িত্ব পালনকারী এসআই আসাদ বলেন ‘ এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা’। তবে রাতে হানা দেওয়া পুলিশ টীমের প্রধান টিএসআই আমিনুর রহমান বলেন ‘ আবদুল খালেকের বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা রয়েছে। তাকে না পেয়ে কােন নারীকে মারধর করার প্রশ্নই ওঠেনা’। মধ্যরাতে পুলিশের সাথে এতো লােক কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন ওরা আসামিকে দখিয়ে দিতে গিয়েছিল।

কাশিমাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগর সভাপতি আলহাজ্জ্ব সমশের আলী ঢালী জানান, ‘আবদুল খালেক জাতীয় পার্টির লােক। তার বিরুদ্ধে নাশকতার কোন মামলা আছে বলে আমার জানা নেই। তিনি জানান, পুলিশের দলটি ইট ভাটা শ্রমিক সরদার মিজানুরর পক্ষ নিয়ে তার বাড়িতে হানা দিয়ে তার স্ত্রীকে নির্দয়ভাব মারপিট করেছে বলে অভিযােগ পাওয়া গেছে।তিনি আরও জানান পুলিশ যদি দােষী নাই হবে তাহলে প্রেসক্লাবে এসে কেন সাংবাদিকদের কাছে তদবির করছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন